রয়েল এনফিল্ড মেটিওর বাইকটি ক্রজার বাইকের পারফেক্ট উদাহরণ। যারা ক্রজার লাভার তাদেরকে আজ জানাবো Royal Enfield Meteor 350 Price In Bangladesh, Specifications, Mileage সহ বিস্তারিত। বাইকটি সম্পর্কে A to Z জানতে পুরো ব্লগটি পড়ুন।
রয়েল এনফিল্ডের যে চারটি ভেরিয়েন্ট বাংলাদেশের বাজারে এসেছে তার মধ্যে Royal Enfield Meteor 350 বাইকটি সবথেকে কমফোর্টেবল। আর বাইকটির সৌন্দর্যের কথা নাইবা বললাম, বাইকটি দেখেই আপনার হারলে ডেভিডছন বাইকটির কথা মনে পড়বে। আসলে বাইকটি হারলে ডেভিডসনের আদলে তৈরি করা হয়েছে।
Royal Enfield Meteor 350 Price In Bangladesh
রয়েল এনফিল্ডের যে চারটি বাইক বাংলাদেশের বাজারে এসেছে তার মধ্যে এই মেটিওর বাইকটিতেই সব থেকে বেশি কালার ভেরিয়েন্ট পাওয়া যাবে। এই বাইকটিতে মোট ৯ টি কালার ভেরিয়েন্ট আছে। ভিন্ন ভিন্ন কালারের বাইকের দামের ও ভিন্নতা আছে। তবে কালারের ওপর ভিত্তি করে দামের যে ভিন্নতা আছে তা খুবই নগণ্য। চলুন Royal Enfield Meteor 350 বাইকটির কালার অনুযায়ী দামের ভিন্নতা একটি চার্টের মাধ্যমে দেখে আসা যাক।
Color | Price |
Supernova Red | BDT 5,00,000 |
Supernova Blue | BDT 5,00,000 |
Stellar Blue | BDT 4,75,000 |
Stellar Black | BDT 4,75,000 |
Stellar Red | BDT 4,75,000 |
Fireball Blue | BDT 4,35,000 |
Fireball Matt Green | BDT 4,35,000 |
Fireball Red | BDT 4,35,000 |
Fireball Black | BDT 4,35,000 |
রয়েল এনফিল্ড ক্লাসিক, হান্টার, বুলেট ও মেটিওর এর মধ্যে মেটিওর বাইকটিতেই সবথেকে বেশি দামের বাইকটি আছে। Supernova Red ও Supernova Blue এই দুইটি বাইকের দামই সবথেকে বেশি ( পাঁচ লক্ষ টাকা ) বাকি গুলার দাম ৪,৭৫,০০০ ও ৪,৩৫,০০০ এর মধ্যে । ইঞ্জিন, মেটাল বডি ও ব্রান্ড বিবেচনায় বাইকগুলোর দাম ঠিকই আছে।
Royal Enfield Meteor 350 Specifications
Royal Enfield Meteor 350 বাইকটির ফুল স্ফেসিফিকেশন পার্ট বাই পার্ট ছকে আলোচনা করা হয়েছে।
Basic Features
Engine | 349 cc 4 stroke single cylinder engine |
Mileage | 35 km/L |
Braking System | Dual Channel ABS |
Transmission | 5 Speed Manual Gear |
Fuel Tank Capacity | 15 Liters |
Engine, Mileage, Top Speed
Engine | 349 cc |
Max Power | 20.2 bhp @ 6100 rpm |
Max Torque | 27 Nm @ 4000 rpm |
Mileage | 35 km/L |
Top Speed | 112 km/H |
Transmission | 5 Speed Manual Gear |
Gear Shifting Pattern | 1 Down 4 Up |
Cooling System | Air/Oil Cooled |
Engine Oil Capacity | 2.1 Liters |
Engine Oil Grade | 15W-50 |
Fuel Type | Petrol |
Fuel Tank Capacity | 15 Litres |
Reserve Fuel Capacity | 3 Litres |
Dimensions & Chassis
Weight | 191 KG |
Seat Height | 765 mm |
Ground Clearance | 170 mm |
Length | 2140 mm |
Width | 845 mm |
Chassis | Twin Downtube Spine Frame |
Breaks, Wheels and Suspensions
Front Suspension | Telescopic, 41mm forks |
Rear Suspension | Twin Tube Emulsion Shock absorbers |
Braking System | Dual Channel ABS |
Front Brake Type | Disc |
Rear Brake Type | Disc |
Front Brake Size | 300 mm |
Rear Brake Size | 270 mm |
Caliper Front | 2 Piston |
Caliper Rear | 1 Piston |
Wheel Type | Alloy |
Front Wheel Size | 19 inch |
Rear Wheel Size | 17 inch |
Front Tire Size | 100/90 – 19 |
Rear Tire Size | 140/70 – 17 |
Other Features
Instrument Console | Semi Digital |
Speedometer | Alanog |
Odometer | Digital |
Fuel Gauge | Digital |
Hazard Warning Indicator | Yes |
No. Of Tripmeters | 2 |
Tripmeter Type | Digital |
Gear Indicator | Yes |
Fuel Indicator | Yes |
Low Engine Oil Indicator | Yes |
Clock | Yes |
Service Reminder Indicator | Yes |
Battery | 12 V – 8 Ah VRLA |
Head Light | Halogen |
Tail Light | Halogen |
Turn Signal | Halogen |
USB Charging Port | Yes |
Start Type | Electric Start |
রয়েল এনফিল্ড মেটিওর ৩৫০ ইন্জিন
মেটিওরে ব্যবহার কারা হয়েছে ৩৪৯ সি সি ৪ স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার J – সিরিজের ইঞ্জিন। এই বাইকটিতে আগে যে ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতো, সেগুলোতে বাইক একটু স্পিডে চালালে ভাইভ্রেশন বা কম্পন অনুভূত হতো। কিন্তু রয়েল এনফিল্ড তাদের নতুন J – সিরিজের ইঞ্জিনে তারা অনেক পরিবর্তত করেছে, ইঞ্জিন অনেকটা রিফাইন করেছে। যার কারণে এখন আর হায় স্পিডে কম্পন সৃষ্টি হয় না। তাছাড়া আগের ইঞ্জিন গুলো বেশিক্ষণ চালালে অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতো, কিন্তু এই J – সিরিজের ইঞ্জিনে কোনো ওভার হিট হওয়ার সম্ভাবনা নেয়। তবে ৩৫০ সিসি ইঞ্জিন হিসেবে কিছুটা গরম তো হবেই।
আসলে রয়েল এনফিল্ডকে সবাই এর পাওয়ারের জন্য ভালোবাসে। রয়েল এনফিল্ড এর মেটিওর ৩৫০ বাইকটি ৬০০০ ( আর পি এম ) এ ২০.২ ( বি এইচ পি ) পাওয়ার জেনারেট করতে সক্ষম। তাছাড়া এটি ৪০০০ ( আর পি এম ) এ ২৭ ( এন এম ) টর্ক জেনারেট করতে সক্ষম। বাইকটি নিয়ে রাইডারদের বিভিন্ন ধরনের অভাব অভিযোগ থাকলেও পাওয়ার ও টর্ক নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই। বাইকটি আপনি রাইড করলে আপনিও এর তাৎক্ষণিক পাওয়ার ও টর্কের উপস্থিতি গভীর ভাবে অনুভব করতে পারবেন।
Royal Enfield Meteor 350 বাইকটির ইঞ্জিন ওয়েল ধারণ ক্ষমতা ২.১ লিটার। আর কোম্পানি ইঞ্জিন ওয়েল হিসেবে 15W-50 গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে। বাইকটি স্ট্রাট কারার জন্য পাবেন না কোনো কিক স্ট্রাটার, দেওয়া হয়েছে ইলেক্ট্রিক ইস্ট্রাটার। এই ইলেক্ট্রিক ইস্ট্রাটার একটু বয়স্ক লোকেদের জন্য খুবই সুবিধাজনক কারণ তারা শক্তি দিয়ে কিক স্ট্রাট করতে অপছন্দ করেন ন।
বাইকটির গিয়ার ফাংসানে পেয়ে যাবেন ৫ স্পিড গিয়ার বক্স। অনেকেই বাইকটি থেকে ৬ স্পিড গিয়ার আশা করেছিলেন তবে কোম্পানি এটিতে ৫ স্পিড গিয়ার বক্স দিয়েছে। তবে রাইডাররা বলছেন ৫ গিয়ারই বাইকটির জন্য যথেষ্ট। অনেক সময় দেখা যায় ট্র্যাফিক সিগনালে দাঁড়ালে পরবর্তীতে আবার বাইক রানিং করার সময় যদি গিয়ার না কমায় তাহলে চেইনের মধ্যে একটা খেঁট খেঁট আওয়াজ হয় কিন্তু এই বাইকটিতে আপনি গিয়ার না কমিয়ে ও ৩ গিয়ারে ০ থেকে রানিং করতে পারবেন।
Royal Enfield Meteor 350 Mileage
মেটিওর এর মাইলেজ ক্লাসিক, হান্টার ও বুলেটের এর কাছাকাছি। বাইকটি প্রতি লিটার পেট্রোলে ৩৫ কিলোমিটার ট্রাভেল করতে সক্ষম। তবে আমি কিছু Royal Enfield Meteor 350 এর রাইডারদের সাথে কথা বলেছি, তারা জানিয়েছে বাইকটি হায়ওয়েতে ৪০ কিলোমিটার মাইলেজ দিয়েছে। তবে এই মাইলেজ সিটিতে আশা করা যাবে না। সিটিতে আপনারা ৩৫ এর আশেপাশে মাইলেজ পেয়ে যাবেন। একটি ৩৫০ সিসির বাইক থেকে ৪০ কিলোমিটার মাইলেজ পাওয়াটা আসলেই একটু ম্যাজিকেল ব্যাপার। আশা করি বাংলাদেশের রাস্তায় ও আপনার Royal Enfield Meteor 350 Mileage নিয়ে কোনো অভিযোগ অভিযোগ থাকবে না।
বাইকটি ১৩ লিটার ক্যাপাসিটির ফুয়েল ট্যাংক ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সাথে ৩ লিটার রিজার্ভ ফুয়েল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে আপনার বাইকের হঠাৎ তেল শেষ হয়ে গেলে আপনি এই রিজার্ভ তেল ব্যবহার করে তেল পাম্প পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন। তবে এই ৩ লিটার তেল ব্যবহার করে আপনি অনায়াসে ১০০ কিলোমিটারের বেশি রাইড করতে পারবেন।
Royal Enfield Classic 350 বাইকটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
রয়েল এনফিল্ড মেটিওর ৩৫০ টপ স্পিড
বাইকটি যেহেতু ক্রজার বাইক এবং বাইকটি মূলত কমফোর্টের জন্য বেস্ট। বাইকটি যেহেতু রেসিং বাইক না তাই এর টপ স্পিড ও বেশি আশা করা যাবে না। রয়েল এনফিল্ড মেটিওর ৩৫০ টপ স্পিড ১১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। যদি আপনি স্পিডের জন্য বাইকটি নিতে চান তাহলে বলবো বাইকটি আপনার জন্য না। মেটিওর বাইকটি মূলত কমফোর্ট লাভারদের জন্য। কিছু মেটিওর রাইডাররা বলেছেন তারা বাইকটি নিয়ে টানা ২০০ কিলোমিটার রাইড করেছেন এবং তাদের কোনো ধরনের হাতে, পায়ে বা পিঠে ব্যথা অনুভব করেননি। বাইকটির সিটিং পজিশন এতটায় আরামদায়ক যে আপনি অনেক সময় ধরে বাইক রাইড করলে ও শরীরে কোনো ক্লান্তি আসবে না।
Royal Enfield Meteor 350 Brakes
মেটিওরে সামনে ও পিছনে ডিস্ক ব্রেক দেওয়া হয়েছে। সামনের ডিস্কের সইজ ৩০০ মিলিমিটার আর পিছনের ডিস্কের সাইজ ২৭০ মিলিমিটার। রয়েল এনফিল্ড ব্রেকিং এর ক্ষেত্রে তাদের পুরোনো প্রযুক্তি ব্যবহারের যে প্রবনতা তা এড়িয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে। বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ডুয়েল চ্যানেল এ বি এস। বাইকটির সামনের ব্রেকে ব্যবহার করা হয়েছে ২ কেলিপার পিস্টন আর পিছনের ব্রেকে ব্যবহার করা হয়েছে ১ কেলিপার পিস্টন।
বাইকটির এই ডুয়েল চ্যানেল এ বি এস এর কারনে রাইডাররা কনফিডেন্স নিয়ে বাইক রাইড করতে পারে এবং জরুরি ব্রেকিং এর ক্ষেত্রে চাকা স্কেটিং করে পড়ে যাওয়ার যে প্রবনতা তা কমিয়ে দেয়। বাইকটির ব্যবহারকারীরা বলছেন তারা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ১১০ থেকে ০ তে গতি নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। তবে ব্রেকিং কতটা পারফেক্ট এবং স্মুথ হবে তা নির্ভর করে রাইডারের স্কিল এর ওপর।
Royal Enfield Meteor 350 Wheels
Royal Enfield Meteor 350 বাইকটিতে ক্রজার লুক দেওয়ার জন্য বাইকটির পিছনে সামনের থেকে ছোট চাকা ব্যাবহার করা হয়েছে। এটির সামনে আছে ১৯ Inch চাকা আর পিছনে পেয়ে যাবেন ১৭ Inch চাকা। সামনের চাকায় ব্যাবহার করা হয়েছে ১০০/৯০ – ১৯ সেকশনের টিউবলেস টায়ার আর এর পিছনের চাকায় ব্যবহার করা হয়েছে ১৪০/৭০ ১৭ সেকশনের টিউবলেস টায়ার।
বাইকটির পিছনের চাকা বেশ চওড়া হওয়ায় আপনি খুব ভালোভাবে কর্ণরিং করতে পারবেন। কর্ণরিং করতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার ভয়টা থাকবে না। তাছাড়া বাইকটিতে টিউবলেস টায়ার থাকার কারণে চাকা লিক হওয়ার ভয়টা থাকবে না।
রয়েল এনফিল্ড মেটিওর ৩৫০ সাসপেনসন
Royal Enfield Meteor 350 এর সাসপেনসন হিসেবে সামনে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কপিক সাসপেনসন যার ফ্রোক সাইজ 41mm। বাইকটির পিছনে ব্যবহার করা হয়েছে Twin Tube Emulsion Shock absorbers সাসপেনসন। বাইকটির চ্যাসিজে ব্যবহার করা হয়েছে Twin Downtube Spine Frame. মেটিওর এর ব্যবহারকরীরা বেলেছেন ছোট ছোট ঝাঁকি আপনি বাইকটিতে অনুভব করতে পারবেন না।
যেহেতু বাইকটির ওজন অনেক বেশি এবং সাসপেনসন ও ভালো তাই আপনি ফিল করতে পারবেন বাইকটি কতটা স্মুথলি রাস্তার সাথে আটকে আছে।
Royal Enfield Meteor 350 Hight, Weight, Ground Clearance
Royal Enfield Meteor 350 এর ওজন ১৯১ কেজি। এই বেশি ওজন কন্ট্রোল করার জন্য রাইডারকে অবশ্যই সিটে বসে মাটিতে ভালো মতে পায়ের গোড়ালি স্পর্শ করাতে হবে। সে জন্য Royal Enfield বাইকটির সিট হাইট কম দিয়েছে। বাইকটির সিট হাইট 765 mm, বাইকটিতে ৫.৫ এর রাইডাররা ও খুব ভালো ভাবেই রাইড করতে পারবেন। বাইকটির গ্রাইন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৭০ মিলিমিটার। বাইকটির সিট হাইট কম হলেও সিটিং পজিশনের কারণে লম্বা রাইডাররা খুব আরামদায়ক ভাবে লম্বা রাইড করতে পারবেন। তাছাড়া এর পারফেক্ট ওয়েট ডিসট্রিবিউসনের কারণে বাইকটির বেশি ওজন আপনি ফিল করতে পারবেন না।
রয়েল এনফিল্ড হান্টারের ৩৫০ এর ওজন সব থেকে কম, যদি আপনি কম ওয়েটের রয়েল এনফিল্ড ব্যবহার করতে চান তাহলে রয়েল এনফিল্ড হান্টার দেখতে পারেন। Royal Enfield Hunter 350 এর দাম ও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
রয়েল এনফিল্ড মেটিওর ৩৫০ অন্যান্য ফিচার
বাইকটির হেডলাইটে, টেইল লাইট ও ইন্ডিকেটরে ব্যবহার করা হয়েছে হ্যালোজেন লাইট। বাইকটির হেডলাইটে ক্রম ফিনিশিং এর দুর্দান্ত ডিজাইন। এটিতে সেমি ডিজিটাল মিটার ব্যবহার করা হয়েছে। স্পিডোমিটারটি পাবেন এনালগ তবে ফুয়েল ইন্ডিকেটর, গিয়ার ইন্ডিকেটর এগুলো ডিজিটাল। বাইকটিতে পেয়ে যাবেন একটি USB পোর্ট। এই USB পোর্ট ব্যবহার করে আপনি আপনার মোবাইল ফোন, পাওয়ার ব্যাংক, ক্যামেরা চার্য করতে পারবেন।
Royal Enfield Meteor 350 সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।