বাইকের কম্ফোর্ট আর ব্রেকিং কোয়ালিটি নিয়ে কথা বলতে গেলে সবার আগে Yamaha fzs v2 বাইকটির কথা মাথায় আসে। বাইকটির এট্রাকটিভ লুক আর দুর্দান্ত গ্রাফিক্স বাইকটিকে আরো বেশি পপুলার করে তুলেছে। আজ আমি Yamaha fzs v2 price in bd এবং এর Specifications নিয়ে আলোচনা করবো।
Yamaha fzs v2 বাইকটি একটি স্পোর্টস কমিউটার ধরনের বাইক। এটির ডিজাইন স্পোর্টি মাসকিউলার তবে বাইকটির বডির ধরন কমিউটারের মতো। এটির সিটিং পজিশন ও যথেষ্ট কমফোর্টেবল। অনেক স্পোর্টস বাইকে দেখা যায় বেশি সময় ধরে রাইড করলে রাইডারদের পিছে এবং হাতে ব্যথা অনুভব করে তাবে fzs v2 বাইকটিতে এই ধরনের কোনে সমস্যা নাই।
এই বাইকটি আপনি আপনার রেগুলার ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন একই সাথে লং টুর ও করতে পারবেন। বাইকটিতে FI সিস্টেম থাকার কারণে যথেষ্ট ফুয়েল সাশ্রয় হওয়ায় এটি আমি কমিউটার বাইক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন, যেমন রেগুলার অফিস যাতায়াতে বাইকটি ব্যবহার করতে পারবেন।
Yamaha fzs v2 price In bd
বাংলাদেশের বাজারে দুইটি কালার ভেরিয়েন্টে fzs v2 বাইকটি পাওয়া যাচ্ছে। সবগুলো বাইকই দেখতে দুর্দান্ত, এটির অসাধারণ গ্রাফিক্স আর মাসকিউলার বডি বাইকটিকে আরো বেশি পপুলার করে তুলেছে।
বাংলাদেশের বাজারে বাইকের দাম সর্বদাই ওঠানামা করে। কালারের ওপর ভিত্তি করেও দামের কিছুটা তারতম্য হতে পারে। আমি বাইকটির বর্তমান দামের ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো তবে বাইক কেনার আগে অবশ্যই বাজার যাচাই করে নিবেন।
Color | Price |
Armada Blue | BDT – 235,000 |
Dark Knight | BDT – 235,000 |
আপনার বাজেট যদি হয় দুই লক্ষ টাকার আশেপাশে তাহলে চোখ বন্ধ করে আপনি এ Yamaha fzs v2 বাইকটি নিতে পারেন। এই বাজেটে আপনি অন্য বাইক পেলেও আমার মতে এই বাইকটি নেয়া বেস্ট হবে কারণ এই বাইকটির রিসেল ভ্যালু যা পাবেন তা অন্য কোনো বাইকে পাবেন না।
এই প্রাইস সেগমেন্টে যদি আপনি সুজুকি বাইক নিতে চান তাহলে Suzuki Gixxer Monotone এই বাইকটি দেখতে পারেন। এই বাইকটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
Yamaha FZS V2 Specifications
বাজেট অনুসারে বাইকটিতে ভালো ফিচার সংযুক্ত করা হয়েছে তবে রাইডাররা Yamaha এর কাছ থেকে আরো কিছু ফিচার আশা করেছিল। রাইডারদের কি কি প্রত্যাশা ছিল তা আমরা একটু পরে জানবো এখন এক নজরে বাইকটির ফুল স্পেসিফিকেশন দেখে নেওয়াযাকা।
Basic Features
Engine | 149 cc |
Mileage | 45 km/L |
Braking System | Disc Brake |
Transmission | 6 Speed Manual Gear |
Fuel Tank Capacity | 12 Liters |
Engine, Mileage, Top Speed
Engine | 149 cc |
Engine Type | Air-cooled, 4-stroke, Syngle Cylinder |
Fuel Supply | Electric Fuel Injector (EFI) |
Max Power | 13 bhp @ 8000 rpm |
Max Torque | 12.8 Nm @ 6000 rpm |
Mileage | 45 km/L |
Top Speed | 120 km/H |
Transmission | 5 Speed Manual Gear |
Gear Shifting Pattern | 1 Down 4 Up |
Cooling System | Air Cooled |
Engine Oil Capacity | 1 Liter |
Engine Oil Grade | 10W 40 |
Fuel Type | Petrol |
Fuel Tank Capacity | 12 Litres |
Reserve Fuel Capacity | No Reserved Fuel |
Dimensions & Chassis
Weight | 132 KG |
Seat Height | 790 mm |
Ground Clearance | 160 mm |
Length | 1990 mm |
Width | 770 mm |
Chassis | Diamond Type |
Brakes, Wheels and Suspensions
Front Suspension | Telescopic |
Rear Suspension | Swingarm |
Braking System | Duel Disc |
Front Brake Type | Disc |
Rear Brake Type | Disc |
Front Brake Size | 242 mm |
Rear Brake Size | 220 mm |
Caliper Front | 2 Piston |
Caliper Rear | 1 Piston |
Wheel Type | Alloy |
Front Wheel Size | 17 inch |
Rear Wheel Size | 17 inch |
Front Tire Size | 100/80 – 17 M/C(52p) |
Rear Tire Size | 140/60 – R17 M/C(63p) |
Tyre Type | Tubeless |
Other Features
Traction Control | No |
Quick Shifter | No |
Call/SMS Alerts | No |
Instrument Console | Digital |
Speedometer | Digital |
Odometer | Digital |
Fuel Gauge | Digital |
Hazard Warning Indicator | Yes |
No. Of Tripmeters | 2 |
Tripmeter Type | Digital |
Gear Indicator | No |
Fuel Indicator | Yes |
Low Engine Oil Indicator | Yes |
Clock | No |
Service Reminder Indicator | No |
Battery | 12V, 4.0Ah (10H) |
Head Light | LED |
Tail Light | LED |
Turn Signal | LED |
USB Charging Port | No |
Bluetooth | No |
Start Type | Electric Start / Kick |
Yamaha FZS V2 Engine
Yamaha FZS V2 একটি স্পোর্টস কমিউটার কোয়ালিটির বাইক হওয়ায় এর ইঞ্জিন ও এভাবেই তৈরি করা হয়েছে। বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৪৯ সিসির ৪ স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন। বাইকটিতে কোনো লিকুইড কুল বা ওয়েল কুলিং সিস্টেম থাকছে না। এটিতে পেয়ে যাবেন গতানুগতিক এয়ার কুল ইঞ্জিন। তবে ইউজাররা জানিয়েছেন বাইকটি থেকে কোনো ইঞ্জিন ওভার হিট হওয়ার সমস্যা পাওয়া যায়নি।
বাইকটিতে রয়েছে ৫ স্পিড ম্যানুয়াল গিয়ারবক্স। রাইডাররা জানিয়েছে বাইকটির গিয়ার সিফট করতে কোনো ধরনের বেগ পোহাতে হয় না। অর্থাৎ বলা যায় এটির গিয়ার সিফটিং যথেষ্ট স্মুথ। বাইকটির প্রথম গিয়ারটি নিচে আর বাকি চারটি গিয়ার উপরে। বাইকটির ড্যাশবোর্ডে কোনো ধরনের গিয়ার ইন্ডিকেটর না থাকায় রাইড করার সময় বাইক কোন ডিয়ারে আছে তা বোঝা কষ্টকর হয়ে যায়।
বাইকটিতে FI সিস্টেম থাকার কারণে কিছুটা পাওয়ারের কমতি লক্ষ করা যায়। একা রাইড করলে মোটামুটি ভালোই রাইড করা যায় তবে যতি পিলিয়ন নিয়ে রাইড করার সময় স্পিড ৮০ ক্রস করলে কিছু পাওয়ারের কমতি লক্ষ করা যায়। এটি ৮০০০ ( আর সি এম ) এ ১৩.০ ( বি এইস পি ) পাওয়ার উৎপাদন করতে পারে যা এই ধরনের বাইকের জন্য যথেষ্ট এবং এটি ৬০০০ ( আর পি এম ) এ ১২.৮ নিউটন মিটার টর্ক উৎপাদন করতে পারে।
FI সিস্টেমের কারণে পাওয়ার কিছুটা কম পেলেও মাইলেজ আপনার মন ভরিয়ে দিবে। বাইকটির আগের ভার্সনে কার্বরেটর এঞ্জিন ব্যবহার করা হলেও নতুন ভার্সনে ইলেক্ট্রিক ফুয়েল ইন্জেক্টর বা FI সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে।
বাইকটির টপ স্পিড পেয়ে যাবেন ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। যদিও বাইকটি হাই স্পিড বা রেসিং এর জন্য না তারপরও এটা থেকে যথেষ্ট স্পিড পাওয়া যায়। বাইকটি মূলত এর কন্ট্রোলিং এবং কমফোর্টের জন্য জনপ্রিয়।
বাইকটির ইঞ্জিন ওয়েল ধারণ ক্ষমতা ১ লিটার। ইয়ামাহা কোম্পানি এই বাইকে 10W 40 গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। প্রতি ৩০০০ থেকে ৫০০০ কিলোমিটার রাইড করার পর ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করা উচিত। তবে নতুন বাইকে প্রথমবার ২৫০০ থেকে ৩০০০ কিলোমিটার চলার পর ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তত করা ভালো এতে ইঞ্জিন ভালো থাকবে।
আপনি যদি হায়ার সিসির ক্রজার বাইক পছন্দ করেন তাহলে রয়েল এনফিল্ডের Royal Enfield Meteor 350 এই বাইকটি দেখতে পারেন। বাইকটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
Yamaha FZS V2 Mileage
বাইকটি থেকে ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটারে মাইলেজ পাওয়া যাবে, তবে মাইলেজ রাস্তার কন্ডিশন ও রাইডারের ওপর ও নির্ভর করে কম বা বেশি হতে পারে। বাইকটির ব্যবহারকারীরা আমাদের জানিয়েছে তারা সিটি এবং হাইওয়েতে রাইড করে গড়ে ৪৫ কিলোমিটার মাইলেজ পেয়েছে।
সিটিতে রাইড করলে ৪২ কিলোমিটার প্রতি লিটার আর হাইওয়েতে ৪৮ প্লাস মাইলেজ পাওয়া যাবে। অনেকেই জানিয়েছেন তারা ৫২ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ পেয়েছে। এটিতে FI সিস্টেম থাকার কারণে যথেষ্ট ফুয়েল সাশ্রয় হয়।
সচরাচর সব বাইকেই রিজার্ভ ফুয়েলের ব্যবস্থা রাখা হয় তবে এই Yamaha FZS V2 বাইকে কোনো রিজার্ভ ফুয়েল রাখা হয়নি।
Yamaha FZS V2 Dimensions & Chassis
শর্ট হাইটের রাইডারদের কথা মাথায় রেখই বাইকটির সিট হাইট যথেষ্ট কম রাখা হয়েছে, এটির সিট হাইট ৭৯০ মিলিমিটার। তাছাড়া বাইকটি সহজে কন্ট্রোল করার জন্য এটির ওজন যথেষ্ট কম রাখা হয়েছে। বাইকটির ওজন ১৩২ কেজি। ওজন কম থাকার কারণে ঢাকা শহরের রাস্তায়, ট্র্যাফিক জ্যামের মধ্যে খুব ভালো ভাবে বাইকটিতে কন্ট্রোল করা যাবে।
এটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬০ মিলিমিটার যা সব ধরনের স্পিড ব্রেকার পার হওয়ার জন্য যথেষ্ট তবে ভাঙ্গা রাস্তায় বা অফরোডিং এর ক্ষেত্রে এই গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স যথেষ্ট উপযোগী নয়।
বাইকটির বডি ১৯৯০ মিলিমিটার লম্বা এবং ৭৭০ মিলিমিটার চওড়া। এই বিশাল বডির বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হলে যে কেউ এটির দিকে নজর দিতে বাধ্য হবে।
Yamaha FZS V2 Wheels
বাইকটির সামনে ও পিছনে ১৭ Inch এলয় চাকা ব্যবহার কারা হয়েছে। সামনের চাকায় ১০০/৮০ – ১৭ সেকশনের টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে আর পিছনে ১৪০/৬০ – ১৭ সেকশনের টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।
পিছনে যথেষ্ট মোটা টায়ার ব্যবহার করার কারণে বাইকটির চাকার সাথে রাস্তার যথেষ্ট ভালো গ্রিপ থাকে। রাইডাররা জানিয়েছে এই বাইকটির টায়ার সিটি অথবা হায়ওয়েতে খুব ভালোভাবেই চালানো যায় তবে এই টায়ারে অফরোডিং এর ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না।
অফরোডিং করতে চাকা স্কেট করে, তবে মোটামুটি ভাঙ্গা রাস্তায় ও এটি খুব ভালো পারফর্ম করে। আপনি চাইলে এই বাইকটির চাকায় ভালোমানের অফরোডিং এর উপযোগী টায়ার লাগিয়ে খুব ভালোভাবেই অফরোডিং করতে পারবেন।
Yamaha FZS V2 Brakes
আমরা যতগুলো রাইডারদের সাথে কথা বলেছি সবাই বাইকটির ব্রেক নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। যদিও বাইকটিতে কোনো ধরনের (এ বি এস) সিস্টেম দেওয়া হয়নি তার পরও কোনো ইউজারের এটি নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই, কারণ এ বি এস ছাড়াই এটি যে ব্রেকিং পারফ্রমেন্স দেয় তা অন্যান্য বাইকের এ বি এস সিস্টেম ও দিতে পারবে না।
বাইকটির সামনে ও পিছনে ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের ডিস্কের সাইজ ২৪২ মিলিমিটার এবং পিছনের ডিস্কের সাইজ ২২০ মিলিমিটার। সামনের ব্রেকে ২ পিস্টন ক্যালিপার এবং পিছনের ব্রেকে ১ পিস্টন ক্যলিপার ব্যবহার করা হয়েছে।
Yamaha FZS V2 Suspensions
বাইকটি যেহেতু কমফোর্টের জন্য পপুলার তাই বলায় যায় এর সাসপেনশন খুবই ভালো। FZS V2 বাইকের সামনে টেলিস্কপিক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে এবং পিছনে Swingarm সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে।
বাইকটি ভাঙা বা ঝাঁকিযুক্ত রাস্তায় ও খুব স্মুথলি চলতে পারে। বাইক রাইড করার সময় ছোটোখাটো ঝাঁকি অনুভব করতে পারবেন না। পিলিয়ন সিটটিও যথেষ্ট কমফোর্টেবল, ভালো ভাবে বসা যায় এবং খুব বেশি ঝাঁকি ও পাওয়া যায় না।
Yamaha FZS V2 Features
বাইকটির কোনো কিছুই এনালগ নয়। সামনের ড্যাশবোর্ডে পেয়ে যাবেন স্পিডোমিটার, ওডোমিটার, ফুয়েল ইন্ডিকেটর ও একটি ট্রিপমিটার। মিটারগুলো ডিজিটাল মিটার হওয়ার কারণে একনজরে সবগুলোতে চোখ বুলোতে পারবেন।
বাইকটির ড্যাশবোর্ডে কোনো ঘড়ি নেই। যদিও বাইকে ঘড়ির কোনো প্রয়োজন নেই তারপরও বর্তমান যুগ হিসেবে একটি ঘড়ি ইয়ামাহা দিতেই পারতো। তাছাড়া বাইকটিতে থাকছে না ডিয়ার ইন্ডিকেটর, এটি না থাকার কারণে আপনি কোন গিয়ারে রানিং আছেন তা বুঝতে পারবেন না। তবে আপনি চাইলে বাজার থেকে এক্সট্রা গিয়ার ইন্ডিকেটর লাগিয়ে নিতে পারবেন।
বাইকটির হেডলাইটে এল ই ডি বাল্ব ব্যবহার করা হয়েছে যা রাত্রে চলার সময় যথেষ্ট আলো দিবে। ইয়ামাহা আগের বাইকগুলোতে হ্যালোজেন লাইট ব্যবহার করলে এখন এল ই ডি ব্যবহার করছে।
এই বাইকটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে এ সি আই (ACI) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন। ACI এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য এখানে ক্লিক করুন।